গত তিন মাসে শুধু ব্যাংকেই নতুন কোটিপতি হয়েছেন অর্থাৎ এক কোটি এক টাকা থেকে ৫০ কোটি টাকার ওপরে মজুদ রয়েছে এমন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজারের মতো।
মঙ্গলবার প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে, গত জুন শেষে দেশে কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৫৪ জনে।
গত মার্চ শেষে এ সংখ্যা ছিল এক লাখ ১০ হাজার ১৯২ জন। অন্যদিকে ৫০ কোটি টাকার ওপরে ব্যাংকে মজুদ রেখেছে এমন ব্যক্তির সংখ্যা এক হাজার ৮২৪ জন।
হঠাৎ কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, সামনে নির্বাচন। একশ্রেণীর মানুষের হাতে অস্বাভাবিক হারে অর্থ চলে আসছে। আর এ কারণে ব্যাংকে তাদের অর্থের পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এ পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, ক্ষুদ্র আমানতকারীদের আমানত খুবই কম, বিপরীতে কোটিপতিদের আমানত বাড়ছে অস্বাভাবিক হারে।
বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, ক্ষুদ্র আমানতকারীরা তাদের আয়ের সাথে ব্যয় সমন্বয় করতে পারছেন না। জীবনযাত্রার ব্যয় অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। ক্ষুদ্র আমানতকারীদের সংখ্যা না বাড়ার অর্থই হলো দেশে অর্থনৈতিক বৈষম্য বেড়েছে।
এরপর গত সপ্তাহে সরকার হঠাৎ ডিম, আলু ও পেঁয়াজের দাম বেঁধে দিয়ে বাজারে হস্তক্ষেপ করে সরকার। কিন্তু এ প্রচেষ্টাও এসব নিত্যপণ্যের মাত্রাতিরিক্ত দাম কমিয়ে ভোক্তাদের স্বস্তি দিতে পারেনি।
খাদ্য মূল্যস্ফীতির এই আকস্মিক উল্লম্ফনে চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে আটকে রাখা যাবে কি না, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরাও।
রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় আগামী মাসে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়তে পারে। যদিও চলতি অর্থবছরে সরকার গড় মূল্যস্ফীতি নির্ধারণ করেছে ৬ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকরা বারবার বলেছেন, কঠোর মুদ্রানীতি না থাকায় মূল্যস্ফীতি কমছে না। সেইসাথে ডলারের বিপরীতে টাকার ব্যাপক অবমূল্যায়ন এবং বিনিময় হারের অস্থিতিশীলতার কারণে স্থানীয় বাজারে আমদানি করা নিত্যপণ্যের দাম অন্তত ২৫ শতাংশ বেড়ে গেছে।
ডলার সংকটের কারণে বিশ্ববাজারে কিছু পণ্যের দাম কমার সুফল নিতে পারেনি আমদানিকারকরা।